জ্যামিতিক গড় ও তরঙ্গ গড়ের ব্যবহার সুবিধা, অসুবিধা

জ্যামিতিক গড় ও তরঙ্গ গড়ের ব্যবহার সুবিধা, অসুবিধা

ভূমিকা:- কোনো সমজাতীয় তথ্য রাশির যতগুলো হান থাকে তার সয়গুলোকে একত্রে গুণ করে গুণফলের অতমূলকে জ্যামিতিক গড় বলে। সামাজিক প্রপঞ্চের ভিন্নতা অনুযায়ী জ্যামিতিক গড়ের ব্যবহার ক্ষেত্রেও আলাদা।

জ্যামিতিক গড় ও তরঙ্গ গড়ের ব্যবহার সুবিধা, অসুবিধা

জ্যামিতিক গড়ের ব্যবহার:

জ্যামিতিক গড়ের ব্যবহারের ক্ষেত্রে গাণিতিক গড়ের তুলনায় বেশি সীমিত। সাধারণত অনুপাত, শতকরা হার প্রভৃতি গড় নির্ণয়ের ক্ষেত্রে জ্যামিতিক গড় যাবহার করা হয়। সূচক সংখ্যা পরিগণনায় এর ব্যবহার হয়ে থকে। কোনো বিষয় বা প্রপক্ষের হ্রাস বৃদ্ধির হার এর মাধ্যমে জানা যায়। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, মৃত্যুহার, লাভক্ষতির হার প্রকৃতি দায়ে এ গড়ের ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে অর্থনৈতিক বিভিন্ন গবেষণায় জ্যামিতিক গড়ের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পরিসংখ্যানিক তথ্য বিশ্লেষণের একটি অন্যতম হাতিয়ায় হচ্ছে জ্যামিতিক গড়। বেসায় বাণিজ্য ইত্যাদির গড় হয়।

জ্যামিতিক গড়ের সুবিধা ও অসুবিধা

সামাজিক প্রপঞ্চগুলোর কেন্দ্রীয় প্রবণতায় পরিমাণকে প্রপঞ্চের ভিন্নতার কারণে যে নানামুখী পদ্ধতি প্রয়োগ হয় তার মধ্যে জ্যামিতিক গড় অন্যতম।

কোনো তথ্যসারিতে যতগুলো সংখ্যা থাকে তার গুণফল জ্যামিতিক গড়। কারণ অশূন্য ঋণাত্মক মান বিশিষ্ট N-তম মূলকে তথ্য সারির জ্যামিতিক গড় বলে।

জ্যামিতিক গড়ের সুবিধা:

(ক) এর সুস্পষ্ট গাণিতিক সংজ্ঞা রয়েছে।

(খ) একে সুনির্দিষ্ট সূত্রের মাধ্যমে প্রকাশ সম্ভব বলে এর সঠিক মান নির্ণয় করা সহজ।

(গ) তথ্য সারির মানের উপর ভিত্তি করে এটা নির্ণীত হয় এবং প্রান্তিক বা চরমমান দ্বারা কম প্রভাবিত হয়।

(ঘ) নমুনা বিচ্যুতি দ্বারা জ্যামিতিক গড় তেমন প্রভাবিত হয় না।


জ্যামিতিক গড়ের অসুবিধা:

(ক) জ্যামিতিক সূত্র বোঝা কঠিন।

(খ) এটা সহজে নির্ণয় করা যায় না। এটা নির্ণয় করা বেশ সময়সাপেক্ষ।

(গ) অধিক মানবিশিষ্ট তথ্য সারিতে বা অধিক গণসংখ্যা বিশিষ্ট নিবেশনে এর প্রয়োগ উচিত নয়।

পরিশেষে বলা যায় যে, এটি একটি গাণিতিক পদ্ধতি, যার সাহায্যে তথ্যসারিত অল্পসংখ্যক অথচ সকল মাদকে বিবেচনায় এনে তথ্যগুলোর একটি বড় মান নির্ণয় করা যায়।


তরঙ্গ গড়ের ব্যবহার

কতকগুলো শূন্য নয় এমন সংখ্যার উল্টামানের গাণিতিক যে ফলাফল তাই তরঙ্গ গড় বা উল্টানো গড়। পরিসংখ্যানে এর ব্যবহার খুব কমই হয়ে থাকে তবে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে এর ব্যবহার দেখা যায়।

তরঙ্গ গড়ের ব্যবহার: সাধারণত পরিসংখ্যান কার্যে তরঙ্গ গড়ের ব্যবহার বেশ সীমিত। যে রাশি-তথ্যমালার স্বল্প সংখ্যক অতি উচ্চ বা নিম্ন মানের রাশি থাকে সেক্ষেত্রে তরঙ্গ গড়ের ব্যবহার হয়। তাছাড়া সময় হার ও মূল্য সংক্রান্ত গড় নির্ণয়ের ক্ষেত্রে তরঙ্গ গড় ব্যবহৃত হয়। টাকায় কতটি পণ্য পাওয়া যায়, মিনিটে কতটি অক্ষর টাইপ করা হয় এ ধরনের হিসাবের ক্ষেত্রে তরঙ্গ গড় ব্যবহার করা হয়।


তরঙ্গ গড়ের ব্যবহারে সুবিধা:

নিম্নে তরঙ্গ গড়ের ব্যবহারের সুবিধা উল্লেখ করা হলো-

১. এতে রাশি তথ্যমালার প্রতিটি রাশি হিসাব করা হয় বলে সঠিক ফল পাওয়া যায়।

২. প্রান্তিক মান দ্বারা কম প্রভাবিত হয়।

৩. এক্ষেত্রে বীজ গণিতের নিয়মাবলি প্রয়োগ করা যায়।

৪. এতে গাণিতিক প্রক্রিয়া আরোপ করা যায়।

৫. সঞ্চয়, হার ও মূল্য প্রভৃতি নির্ণয়ে বিশেষ উপযোগী।


তরঙ্গ গড়ের ব্যবহারের অসুবিধা

তরঙ্গ গড় ব্যবহারের অসুবিধাগুলো দিয়ে আলোচনা করা হলো-

১. খুব সহজে বুঝা যায় না।

২. তথ্যসারির সকল সংখ্যা জানা না থাকলে এ গড় নির্ণয় করা যায় না।

৩. সিরিজের কোন মান রাশি শূন্য হলে গড় নির্ণয় করা যায় না।

৪. ছোট মানগুলোর উপর বেশি গুরুত্ব দেয়।

৫. ভিন্ন সংখ্যাত্মক মান গ্রহণ করে।

৬. তরঙ্গ গড়ের মান সরাসরি বহির্ভূত হতে পারে।

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, সহজে বুঝতে নির্ণয় করতে তথ্য সারিতে শূন্য সংখ্যা থাকলে এবং তথ্য সারির সকল মান যদি জানা না থাকে তাহলে তরঙ্গ গড় থেকে ব্যবহার করা সম্ভব নয়।

No comments:

Post a Comment